প্রকাশিত: Sun, Mar 17, 2024 1:08 PM
আপডেট: Tue, Jun 24, 2025 7:48 PM

[১]আবদুল্লাহ জাহাজে আরও জলদস্যু উঠেছে [২]দস্যুদের ব্যবহৃত আরেকটি জাহাজের গতিরোধ করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী

সালেহ্ বিপ্লব, এমআর আমিন: [৩] এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটির মালিক, এস আর শিপিং লিমিটেডের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম শনিবার সন্ধ্যায় আমাদের নতুন সময়কে বলেন, জাহাজটিতে আরও ১৩ জন সশস্ত্র জলদস্যু উঠেছে। বর্তমানে জাহাজটিতে দস্যুর সংখ্যা ২২। এ কারণে বর্তমান পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। তবে তারা এখনো মুক্তিপণ দাবি করেনি। জাহাজ নিয়ে তাদের পছন্দ মত কোনো নিরাপদ অবস্থানে পৌঁছানোর পরই হয়তো দস্যুরা মুক্তিপণ দাবি করতে পারে।

[৪] ভারতীয় গণমাধ্যমে এমভি আবদুল্লাহ উদ্ধারের খবর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ খবরের কোনো ভিত্তি নেই। ভারতীয় নৌবাহিনী জাহাজটি উদ্ধার করলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতো। 

[৫] জলদস্যুরা জাহাজটি ছিনতাই করে সোমালিয়ার উপকূল গারাকাতে নোঙর করেছিলো। বাংলাদেশের এস আর শিপিং-এর এই জাহাজটি শুক্রবার ৪৫-৫০ নটিক্যাল মাইল উত্তর দিকে সরিয়ে গদবজিরান উপকূলে নেওয়া হয়েছে। জলদস্যুদের নির্দেশে গদবজিরান শহর থেকে ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করা হয়েছে। ২৩ নাবিকের সবাই নিরাপদে আছেন, সুস্থ আছেন। 

[৬] শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএমওএ) এক বিবৃতিতে কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন এমভি আব্দুল্লাহর সর্বশেষ অবস্থান জানিয়েছে। অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, যারা জাহাজটির অবস্থান ট্র্যাক করছে, তাদের কাছ থেকে এ তথ্য পেয়েছি।

[৭] এর আগে শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে জাহাজটির নতুন গন্তব্যে রওয়ানা হওয়ার কথা জানান জাহাজের চিফ অফিসার ক্যাপ্টেন মো. আতিক উল্লাহ খান।  বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তিনি এস আর শিপিং-এ পাঠানো ই-মেইলে জানান, জাহাজটি গারাকাত উপকূল থেকে উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। 

[৮] জলদস্যুদের হাতে জিম্মি এমভি আবদুল্লাহকে পর্যবেক্ষণে রেখেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল ফোর্স (ইইউএনএভিএফওআর)। তাদের এই কার্যক্রমের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন আটলান্টা’।

[৯] এর আগে ওই অঞ্চলে ‘এমভি রুয়েন’ নামের আরেকটি জাহাজ ছিনতাই করে জলদস্যুরা। ওই দলের সদস্যরাই এমভি আবদুল্লাহর ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে ইইউএনএভিআফওআর-এর বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। 

[১০] এদিকে, ভারতীয় নৌবাহিনীর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, সোমালি জলদস্যুদের দখলে থাকা এমভি রুয়েনকে ঘেরাও করে তাদের আত্মসমর্পণ করতে বলেছে ভারতীয় নৌবাহিনী। তাদের কাছে জিম্মি থাকা বেসামরিক নাগরিকদের ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

[১১] মুখপাত্র বলেছেন, জলদস্যুরা গত ১৪ ডিসেম্বর মাল্টার পতাকাবাহী এমভি রুয়েন কার্গো জাহাজটি ছিনতাই করেছিল। তারা শুক্রবার আন্তর্জাতিক জলসীমায় নৌবাহিনীর জাহাজে গুলি চালায়। ছিনতাই করা জাহাজটি দস্যুতার কাজে ব্যবহার করতো তারা।

[১২] জলদস্যুদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা প্রদানের জন্য জানুয়ারিতে লোহিত সাগরের পূর্বে কমপক্ষে এক ডজন যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে ভারত। 

[১৩] এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি নাবিকদের উদ্ধার করেেেছ ভারতীয় নৌবাহিনী। তবে ভারতীয় নৌবাহিনীর মুখপাত্র তাদের এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছেন, তারা এমভি রুয়েন দখল করেছে। 

[১৪] গত ৪ মার্চ বাংলাদেশের এস আর শিপিংয়ের এমভি আবদুল্লাহ মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা দেয়। ১২ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে খবর আসে, ভারত মহাসাগরে জাহাজটি ছিনতাই হয়েছে। 

[১৫] জাহাজে আটক নাবিকদের উদ্ধার নিয়ে সরকার ও মালিকপক্ষ উদ্বিগ্ন। সরকারের পক্ষ থেকে যেমন যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে তেমনিভাবে মালিকপক্ষও পূর্বের অভিজ্ঞতার আলোকে উদ্ধারে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সম্পাদনা: ইকবাল খান